8th Pay Commission: অষ্টম বেতন কমিশনে মাইনে ঠিক কবে থেকে বাড়বে? জেনে নিন পুরো প্রক্রিয়া ও সম্ভাব্য সময়কাল।

কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী ও পেনশনভোগীদের কাছে ২০২৫ সালের অন্যতম বড় প্রত্যাশা—অষ্টম বেতন কমিশন। ইতিমধ্যেই অষ্টম পে কমিশন গঠন এবং টার্ম অফ রেফারেন্স অনুমোদন করে দিয়েছে কেন্দ্র। ফলে এখন সবার নজর রিপোর্ট জমা দেওয়ার সময়সীমা এবং কখন তা বাস্তবে কার্যকর হতে পারে তার ওপর।

১৮ মাসের মধ্যে জমা দিতে হবে রিপোর্ট

বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, অষ্টম বেতন কমিশনকে গঠন করার পর ১৮ মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। কমিশনের কাজের গতি ও আলোচনার অগ্রগতির উপর নির্ভর করে রিপোর্ট নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই জমা পড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। রিপোর্ট জমা দেওয়া হলেই প্রক্রিয়াটি পরবর্তী ধাপে এগোবে।

রিপোর্ট জমার পর কী কী ধাপ থাকে?

  1. রিপোর্ট জমা পড়লে প্রথমে তা কেন্দ্রীয় প্রশাসনের তরফে রিভিউ করা হয়।
  2. প্রয়োজনীয় সংশোধন বা সুপারিশ যোগ করা হয়।
  3. এরপর ফাইলটি পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য। সাধারণত এই পর্যায়টি শেষ হতে প্রায় এক মাস সময় লাগে।

অষ্টম পে কমিশন কবে থেকে কার্যকর হতে পারে?

অতীতের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, ভারতে পে কমিশন গঠনের পর তা বাস্তবে কার্যকর হতে সময় লাগে প্রায় ১ থেকে ২ বছর। তবে কখনও কখনও প্রক্রিয়াটি আরও দীর্ঘায়িত হয়ে ২ থেকে ৩ বছরও সময় নিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ৮ম পে কমিশনের ক্ষেত্রেও একইরকম সময় লাগতে পারে।

যদি কমিশন রিপোর্ট জমাতে দেরি করে অথবা অতিরিক্ত সময় চায়, তাহলে পুরো প্রক্রিয়া আরও ধীর হতে পারে।

সম্ভাব্য সময়সীমার একটি সাধারণ হিসাব

নীচের টেবিলে গড় অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সম্ভাব্য সময়সীমার একটি পরিষ্কার চিত্র তুলে ধরা হলো:

ধাপসম্ভাব্য সময়বিবরণ
কমিশন গঠন সম্পন্ন২০২5-এর নভেম্বরটার্ম অফ রেফারেন্স অনুমোদন
রিপোর্ট জমাগঠন হওয়ার ১৮ মাসের মধ্যে২০২7-এর মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় লাগতে পারে
প্রশাসনিক রিভিউ১ থেকে ২ মাসরিপোর্ট পর্যবেক্ষণ ও সংশোধন
মন্ত্রিসভা অনুমোদনপ্রায় ১ মাসচূড়ান্ত সিদ্ধান্ত
বাস্তবায়নমোট ২–৩ বছরঅতীতের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী

ডিএ কি বন্ধ হবে? নাকি চলতে থাকবে?

কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের বড় প্রশ্ন হল—অষ্টম পে কমিশন কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত তারা কি DA (মহাঘ ভাতা) পাবেন?

সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত কর্মীরা নিয়মিত প্রতি ছয় মাস অন্তর DA বৃদ্ধির সুবিধা পেতে থাকেন। কারণ DA নির্ধারিত হয় CPI-IW (শিল্প শ্রমিকদের জন্য ভোক্তা মূল্য সূচক)-এর ওপর ভিত্তি করে। ১২ মাসের গড় CPI-IW তথ্য ব্যবহার করে DA হিসাব করা হয়। তাই কমিশন দেরিতে লাগু হলেও DA বন্ধ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।

আগের কমিশনের ইতিহাস কী বলছে?

ভারতে প্রতি ১০ বছর অন্তর পে কমিশন বসে। অতীতের ঘটনাগুলি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়—

  • সপ্তম পে কমিশন ২০১৩ সালে গঠিত হয়েছিল
  • রিপোর্ট জমা পড়ে ২০১৫ সালে
  • কার্যকর হয় ২০১৬ সালে

অর্থাৎ রিপোর্ট জমা থেকে বাস্তবায়ন—দেড় থেকে দুই বছর সময় লেগেছিল।

পঞ্চম বেতন কমিশনের সময় রিপোর্ট জমাতে দেরি হওয়ায় সরকার অন্তর্বর্তী সুবিধা হিসেবে কর্মীদের বেসিক বেতন বাড়িয়ে দেয়। ফলে ৮ম পে কমিশনের ক্ষেত্রেও দেরি হলে একই ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

অষ্টম পে কমিশনের ফলে বেতন কত বাড়তে পারে?

যদিও এখনও চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা পড়েনি, বিশেষজ্ঞদের অনুমান অনুযায়ী বেসিক স্যালারি ২.৫ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়—

  • বর্তমান বেসিক যদি ১৮,০০০ টাকা হয়, তা বাড়তে পারে প্রায় ৪৪,২৮০ টাকায়
  • ৩৪,০০০ টাকার বেতন বাড়তে পারে ৮০,০০০ টাকার কাছাকাছি

তবে এগুলি নিশ্চিত নয়, বাস্তব চিত্র জানা যাবে রিপোর্ট প্রকাশিত হলে।

শেষ কথা

অষ্টম পে কমিশনের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য এখনও পর্যাপ্ত সময় থাকলেও কার্যকর হওয়ার সম্ভাব্য সময় ২০২৭–২০২৮-এর মধ্যে। ততদিন কর্মীরা DA পেতে থাকবেন, এবং প্রয়োজনে সরকার অন্তর্বর্তী বেতন বৃদ্ধির ব্যবস্থা করতে পারে। কেন্দ্রীয় কর্মী ও পেনশনভোগীদের নতুন বেতন কাঠামোর অপেক্ষা আরও কিছুটা দীর্ঘ হলেও চূড়ান্ত ফলাফল হতে পারে উল্লেখযোগ্য।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top