অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ২০২৫ সালের কেন্দ্রীয় বাজেট প্রস্তুত করছেন। এই বাজেট নিয়ে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে মধ্যবিত্ত এবং বেতনভোগী চাকরিজীবীরা অত্যন্ত আশাবাদী। কর ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। এই প্রতিবেদনে আয়করের বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সম্ভাবনা বিশদে আলোচনা করা হয়েছে।
বাজেটে মধ্যবিত্তের জন্য বড় ঘোষণা
১. আয়কর স্ল্যাব পরিবর্তন
২০২৫ সালের বাজেটে আয়কর স্ল্যাব পরিবর্তনের প্রত্যাশা রয়েছে। নতুন কর ব্যবস্থাকে আরও আকর্ষণীয় করতে:
- ২০ লক্ষ টাকার ওপরে আয়ের ক্ষেত্রে ৩০% কর আরোপের সুপারিশ করা হয়েছে।
- এই পরিবর্তন বর্তমান মুদ্রাস্ফীতি এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।
- নতুন কর ব্যবস্থার প্রতি আকর্ষণ বাড়ানোর লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
২. প্রবীণ নাগরিকদের জন্য বিশেষ কর সুবিধা
৬০ বছরের ঊর্ধ্বে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য কর ছাড় বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
- আলাদা ট্যাক্স স্ল্যাব প্রবর্তন হতে পারে।
- কম করের হার এবং উচ্চতর কর ছাড়ের সীমা নির্ধারণ করা হতে পারে।
- এই পরিবর্তন প্রবীণদের আর্থিক স্থিতি উন্নত করবে।
৩. স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন বাড়ানো
- পুরনো কর ব্যবস্থায় স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন বর্তমানে ৫০,০০০ টাকা।
- নতুন কর ব্যবস্থায় এটি ৭৫,০০০ টাকা।
- বাজেটে এটি বাড়িয়ে ১ লাখ টাকা করার প্রস্তাব রয়েছে, যা বেতনভোগীদের জন্য স্বস্তি আনবে।
বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সোনার আমদানি শুল্ক পরিবর্তন
বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সোনার আমদানি শুল্কে পরিবর্তনের সম্ভাবনা:
- আগে শুল্ক ১৫% থেকে কমিয়ে ৬% করা হয়েছিল।
- এবার শুল্ক আবার বাড়তে পারে।
- এই পরিবর্তন সোনার বাজারে প্রভাব ফেলতে পারে।
ধারা 80C-তে ছাড়ের সীমা বৃদ্ধি
বর্তমানে ধারা 80C-এর অধীনে ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কর ছাড় পাওয়া যায়।
- এই সীমা বাড়িয়ে ৩.৫ লক্ষ টাকা করার প্রস্তাব রয়েছে।
- গৃহ নির্মাণ ঋণের সুদ কর্তনের জন্য আলাদা সুবিধা প্রবর্তনের দাবিও উঠেছে।
- এই পদক্ষেপ মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য উপকারী হবে।
প্রত্যাশিত প্রভাব: কারা কীভাবে উপকৃত হতে পারেন?
ক্ষেত্র | পরিবর্তনের প্রস্তাব | উপকারভোগী |
---|---|---|
আয়কর স্ল্যাব | নতুন স্ল্যাবে উচ্চ আয়ের ওপর করের হার ৩০% | উচ্চ আয়কারী চাকরিজীবী |
প্রবীণ নাগরিকদের সুবিধা | আলাদা ট্যাক্স স্ল্যাব ও ছাড় | প্রবীণ নাগরিক |
স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন | সীমা বাড়িয়ে ১ লাখ টাকা করার প্রস্তাব | বেতনভোগী চাকরিজীবী |
80C কর ছাড় | ১.৫ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ৩.৫ লক্ষ | মধ্যবিত্ত পরিবার ও গৃহঋণগ্রহীতারা |
সোনার আমদানি শুল্ক | শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব | বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে সহায়ক |
মধ্যবিত্তের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ বাজেট ২০২৫?
১. আয়কর সংক্রান্ত পরিবর্তন সরাসরি মধ্যবিত্তের আর্থিক স্থিতিতে প্রভাব ফেলবে।
২. প্রবীণ নাগরিকদের জন্য বিশেষ কর সুবিধা তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে।
৩. স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন বাড়ানো বেতনভোগী চাকরিজীবীদের আর্থিক সুরক্ষা দেবে।
৪. ধারা 80C-এর অধীনে কর ছাড়ের সীমা বৃদ্ধি সঞ্চয়কে উৎসাহিত করবে।
৫. সোনার আমদানি শুল্ক পরিবর্তন বাজারে সোনার দামের পরিবর্তন ঘটাতে পারে।
Summery:
২০২৫ সালের বাজেট থেকে আয়করদাতারা বড় সুবিধার প্রত্যাশা করছেন। আয়কর স্ল্যাব পরিবর্তন, প্রবীণ নাগরিকদের জন্য কর সুবিধা এবং স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন বাড়ানোর মতো পদক্ষেপগুলি করদাতাদের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। বাজেটে এই প্রস্তাবগুলি বাস্তবায়িত হলে, মধ্যবিত্ত পরিবারগুলির আর্থিক স্থিতি উন্নত হবে এবং সঞ্চয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হবে।তবে সবটাই এখনো বিবেচনাধীন। যত দিন না বাজেট ঘোষণা হচ্ছে ততদিন দেশবাসী অর্থমন্ত্রীর কর ছাড় বা সবটাকেই অমূলক বা ভিত্তিহীন বলে মনে করছেন।